অপারেশন সাকসেসফুল - মোঃ মিসাদ আলী || গল্প || সাহিত্য


প্রতিদিন সকালে গ্রামের মধ্যে একটি করে মাথা বিহীন লাশ পাওয়া যাচ্ছে। গ্রামের মানুষ ভীষণ ভয়ে ভয়ে দিন অতিবাহিত করছে। অফিসার-ইন-চার্জ মিস্টার আয়ান অনেক অনুসন্ধানের পরেও কোন হদিস খুঁজে পাচ্ছেন না। একজন ভিক্টিমের সাথে অন্য ভিক্টিমের কোন মিল নেই, নেই কোন যোগসূত্র যেখান থেকে ক্লু বের করে এগিয়ে যাবেন সমাধানের দিকে। এই সাত দিনে ছয়টা লাশের বিভৎস মৃতদেহ দেখে সহ্য হয়ে গেছে তার। এখন আর লাশ দেখে পেট গুঁড়িয়ে আসে না। আজ বেলা দশটা বেজে গেলেও কোন লাশ পাওয়ার খবর আসেনি তাই কিছুটা স্বস্তি পেলেন যেন। কিন্তু সেই স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দিলো না হাবিলদার। সে খবর এনেছে আরেকটা লাশের সন্ধান পাওয়ার, অগত্যা ছুটতে হলো সেদিকে। অন্য লাশগুলোর মতো এটিও মাথা বিহীন লাশ। অনেক খোঁজা-খুঁজির পরও পাওয়া গেল না মাথা। লাশটা ফরেনসিকে পাঠানোর পর সেখানেই বসে চিন্তা করছেন আয়ান আহমেদ কেসের ব্যাপারে । 
সব ভিক্টিমের রিপোর্টগুলো ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সাব-ইন্সপেক্টর রকি। তাদের অতীত ঘাটতে গিয়ে এক তিক্ত সত্য বেরিয়ে এসেছে রকির সামনে। যারা এতদিন খুন হয়েছে তারা সবাই আয়ান আহমেদের ঘনিষ্ট বাল্য বন্ধু ছিল, এক স্কুলে পড়েছে তারা। সেই সাতজনে স্কুল জীবনে শত্রুতাবশত হত্যা করে তাদেরই এক সহপাঠি রায়হানকে। অনেকের ধারণা আয়ান আহমেদও সাথে ছিলেন তাদের, তবে কোন প্রমান মিলেনি তার বিরুদ্ধে। এতটুকু জানার পর এসআই রকি বের হলেন আয়ান আহমেদের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে।
নিজের জীবন বাঁচানোর কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না আয়ান আহমেদ। গভীর চিন্তায় মগ্ন তিনি, এমন সময় দূরের একটা কাঁচে সূর্যের আলোর প্রতিফলন ঘটলো তার চোখ বরাবর। এগিয়ে গেলেন তিনি, ঘাসে শিশিরবিন্দু চকচক করছে। কাছাকাছি যেতেই একটা মোবাইল স্পষ্ট নজরে এলো তার। মোবাইলটা হাতে তুলে নিয়ে পাওয়ার বাটনে চাপ দেওয়া মাত্র মাটির নিচে থাকা বোমাটার ভয়ঙ্কর বিষ্ফোড়ন ঘটলো।
এসআই রকি এসে দেখে, ছিন্ন-ভিন্ন অবস্থায় পড়ে আছে আয়ান আহমেদের দেহ। পাশেই কিছুটা দূরে পড়ে আছে রায়হানের ছোটো ভাই, তুষার। তুষারের হাতে ছুরি দিয়ে কেটে লিখা আছে, "মিশন সাকসেসফুল"। 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post